ভারতে গরুর মাংস খাওয়ার ‘অপরাধে’ এক মুসলিম তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেছে কয়েকজন উগ্র হিন্দু তরুণ, যারা গরুর মাংস খাওয়াকে ‘জঘন্য অপরাধ’ বলে মনে করে।
দু’সপ্তাহ আগে হরিয়ানায় ওই তরুণীর বাসায় ঢুকেই ধর্ষণ করে এ হিন্দু তরুণেরা। ধর্ষণের আগে তরুণীর এক অাত্মীয় ও তার স্ত্রীকে হত্যাও করে তারা। এ সময় ধর্ষণের শিকার তরুণীর আরেক আত্মীয়কে যৌন হেনস্তা করে তারা।
এ ঘটনার পর স্থানীয় পুলিশ ‘অন্যায়ভাবে আরেকজনের বাড়িতে প্রবেশের’ দায়ে চারজনকে শুধু আটক করেছিল। পরে স্থানীয় জনগণের বিক্ষোভের মুখে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করতে বাধ্য হয়।
২০ বছর বয়সী ওই তরুণী বলেছেন, ধর্ষণকারীরা তাদের ওপর আক্রমণের আগে জিজ্ঞেস করেছিল তারা গরুর মাংস খেয়েছে কিনা।
এনডিটিভিকে তিনি বলেন, ‘তারা আমাদেরকে গরুর মাংস খেয়েছি কিনা জিজ্ঞেস করে। আমরা বলেছি না, আমরা খাইনি। তারা তারপরও জোর করে বলে অমরা খেয়েছি। তখন তারা বলে, তারা আমাদের ক্ষতি করবে যাতে আমরা অার এই কাজ না করি এবং সেকথা অন্যদের বললে আমরা নিজেরাই অপমানিত হব।’
হরিয়ানার একজন উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, অভিযুক্ত যুবকেরা তথাকথিত ‘গো রক্ষক দল’র সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়।
কিন্তু হিন্দু জনগোষ্ঠীর কাছ থেকে একের পর এক এ ধরনের হামলায় মুসলিম সম্প্রদায় ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে।
ভারতের অনেক হিন্দু গোষ্ঠি গরুকে পবিত্র প্রাণী মনে করে এবং দেশটির অনেক রাজ্যের মতো হরিয়ানাতেও গরু জবাই নিষিদ্ধ।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১৬ডিসেম্বর এক বন্ধুর সঙ্গে সিনেমা দেখে বাড়ি ফেরার পথে একটি বাসে উঠেছিলেন ওই তরুণী। বাসে ধর্ষকেরা যাত্রী সেজে বসেছিলেন।
কিছুটা ফাঁকা জায়গায় বাসটি পৌঁছতেই ওই তরুণী ও তার বন্ধুকে প্রচন্ড মারধর করে ও তারপরে ছয়জনে মিলে দলগত ধর্ষণ করেন নির্ভয়াকে।
ওই মেয়েটির অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ছিন্নভিন্ন করে পাষণ্ডরা। পরে নগ্ন অবস্থায় তাদের দুজনকে বাস থেকে ফেলে দেওয়া হয় ও বাসচাপা দিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়।