স্পেশাল করেসপন্ডেন্স:
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে সাম্প্রদায়িক তাণ্ডব চালানোর দায়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের গ্রেপ্তার, নারী নিয়ে লাম্পট্য ও সংগঠনের সিনিয়র নেতাদের মৃত্যুতে বেশ কিছুদিন ধরেই নিষ্ক্রিয় থাকা হেফাজত আবারও নতুন ষড়যন্ত্রের জাল বুনছে। এর পেছন থেকে ইন্ধন দেয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে দুই স্বাধীনতাবিরোধী দল বিএনপি-জামায়াতের।
ইতোমধ্যেই হেফাজতের নানা ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে সারাদেশে যে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে তাতে ক্ষুব্ধ দেশের সাধারণ মানুষ।
তবে নতুন খবর হলো, ধর্মানুভূতিকে পুঁজি করে হেফাজতের দেশব্যাপী কমিটি দেওয়ার ঘোষণা বড়ধরণের কোনও ষড়যন্ত্র কি না, এ প্রশ্নের পাশাপাশি হেফাজত বড় আঘাত হানার প্রস্তুতি নিচ্ছে কি না, এ প্রশ্নও তুলছেন অনেকে।
সাম্প্রতিক সময়ে বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডকে বাধাগ্রস্থ করতে হেফাজত বিএনপি-জামায়াতের মাধ্যমে যে অরাজকতা সৃষ্টি করেছিল তা জনগণ মেনে নেয়নি। ফলে নতুন ষড়যন্ত্রের জাল বিছিয়ে গুজব ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতেই তারা আবারও মাঠে নামতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ এ. আরাফাত।
তিনি বলেন, এর আগেও নানা ইস্যুতে দেশের মানুষের কাছে কোণঠাসা হয়ে পড়ে হেফাজত, জামায়াত, বিএনপি। সারাদেশে কমিটি দেয়ার নামে হেফাজত যে নতুন করে আবারও সহিংসতার চেষ্টা করছে, এটি স্পষ্ট।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ এ. আরাফাত আরও বলেন, নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য আরেক দফা আঘাতের চেষ্টা চালাতে পারে হেফাজত। এর আগেও দেশের সাধারণ মানুষের ধর্মীয় মূল্যবোধকে পুঁজি করে এরা সারাদেশে সহিংসতার ঘটনা ঘটিয়েছে।
ধর্মপ্রাণ নাগরিকদের বিশ্বাসে শেষ পেরেক ঠুকে দিয়ে গেলো বছরের ২৬ থেকে ২৮শে মার্চ হেফাজত যে সহিংসতার জন্ম দিয়েছে এটি রোধ করা না গেলে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি হুমকির মুখে পড়বে।
তথ্য মতে, জুনায়েদ বাবুনগরী হেফাজতের আমির হওয়ার পর থেকেই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ইস্যু, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে মিত্ররাষ্ট্র ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমণ ইস্যুতে পুরোপুরিভাবে সরকারবিরোধী অবস্থানে চলে যায় এবং সরকার পতনের ষড়যন্ত্রও চালায়।
এছাড়া হেফাজতের সাবেক যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হকের নারী বিষয়ক নোংরামিসহ আরও বেশ কিছু কারণে বিতর্কে পড়ে ইসলামপন্থী তথাকথিত এই দলটি। অরাজনৈতিক সংগঠন দাবি করলেও তাদেরকে মূলত স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর হয়ে ভাড়ায় খেলতে দেখা গেছে।
জুনায়েদ বাবুনগরী হেফাজতের আমির থাকা অবস্থাতেই হেফাজতের বেশ কয়েকজন নেতা বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। তাদের সাথে জঙ্গিবাদের সরাসরি সম্পৃক্ততার তথ্য-প্রমাণ মিলেছে। মামুনুল হক পাকিস্থানের কয়েকটি জঙ্গি সংগঠনের সাথে সেখানে গিয়ে বৈঠক করেছেন, তাদের আদলে হেফাজতকে গড়ে তোলার জন্য অর্থ সহায়তাও নিয়েছেন।
হেফাজত নেতাদের মাদ্রাসায় জঙ্গি প্রশিক্ষণ এবং বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় তাদের ধ্বংসাত্মক অভিপ্রায়ও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। যার প্রমাণ মিলেছে গতবছরের সহিংসতায়। এছাড়া ২০১৩ এবং ২০২১ সালে স্পষ্টই হেফাজত যে সরকার পতনের চেষ্টা করেছিল তার নেপথ্যে ছিল বিএনপি-জামায়াত। এজন্য জুনায়েদ বাবুনগরী বড় অঙ্কের অর্থ সহায়তা পান এই দুটি দল থেকে।
আবার সেই অর্থের হিসাব সংগঠনে দাখিল না করার কারণে হেফাজতের প্রধান নিরীক্ষক মাওলানা সলিমউল্লাহ ভরা মজলিশে জুনায়েদ বাবুনগরীর অপকর্ম ফাঁস করে দেন। বিএনপি ও জামায়াতের নেতাদের কাছ থেকে নেওয়া অর্থের হিসাব দাখিল না করেই মারা যান জুনায়েদ বাবুনগরী।