সময় এখন ডেস্ক:
বাংলাদেশে আনুমানিক ৩ লাখ মানুষ স্বর্ণকার পেশায় নিয়োজিত। স্বর্ণকারদের অকাল মৃ’ত্যুর হার বেশি। যেখানে তাদের গড় আয়ু মাত্র ৫৯ বছর। ৫৫% ক্ষেত্রে মৃ’ত্যুর প্রধান কারণ হৃদরোগ। যার মধ্যে ইস্কেমিক হার্ট ডিজিজ ও স্ট্রোক অন্তর্ভুক্ত।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত ‘দেশে স্বর্ণকারদের মৃ’ত্যুর কারণ নিয়ে পরিচালিত গবেষণার ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের একটি গবেষক দল এই গবেষণা পরিচালনা করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।
বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. শহীদুল্লাহ সিকদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, আইসিডিডিআর,বি-এর ইমেরিটাস সায়েনটিস্ট ডা. মো. ইউনুস। সভাপতিত্ব করেন পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ শরীফুল ইসলাম।
ভারবাল অটোপসি পদ্ধতিতে করা গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন উক্ত গবেষণার প্রধান গবেষক পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. খালেকুজ্জামান।
তিনি জানান, বাংলাদেশে আনুমানিক ৩ লাখ মানুষ স্বর্ণকার পেশায় নিয়োজিত। স্বর্ণকারদের অকাল মৃ’ত্যুর হার বেশি। যেখানে তাদের গড় আয়ু মাত্র ৫৯ বছর। ৫৫% ক্ষেত্রে মৃ’ত্যুর প্রধান কারণ হৃদরোগ। যার মধ্যে ইস্কেমিক হার্ট ডিজিজ ও স্ট্রোক অন্তর্ভুক্ত। স্বর্ণকারদের রোগের ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, তাদের ৪৫% কার্ডিওভাস্কুলার রোগে ভুগছিলেন এবং ২০% আক্রা’ন্ত ছিলেন ক্যান্সারে। মৃ’তদের ৬৫% উচ্চ রক্তচাপ, ৫০% ডায়াবেটিস, ৩৫% হৃদরোগ এবং ২০% কিডনি রোগে আক্রা’ন্ত ছিলেন। ৭৫% স্বর্ণকারই দুই বা ততোধিক অসংক্রা’মক রোগে ভুগছিলেন।
ডা. খালেকুজ্জামান বলেন, স্বর্ণকারদের জীবনধারণের অভ্যাস তাদের মৃ’ত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দেয়। মৃ’ত স্বর্ণকারদের ৭০% নিয়মিত ধুমপান ও ২০% ধোঁয়াহীন তামাক জাতীয় দ্রব্য সেবন করতেন। তাদের ৫০% এর নিয়মিত মদ্যপানের অভ্যাস ছিল।
বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, স্বর্ণকারদের পেশাটি ও তাদের জীবনযাত্রাসহ খাদ্যাভ্যাস হৃদরোগ ছাড়াও বক্ষব্যাধির বিভিন্ন ধরনের রোগের সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে। স্বর্ণকাররা পেশা ও ধুমপানের কারণে শ্বাসক’ষ্টজনিত রোগ- রেসট্রিক্টিভ ও অবস্ট্রাক্টিভ লাং ডিজিজেস বা বাধাজনিত শ্বাসক’ষ্ট রোগে আক্রা’ন্ত হয়।
এগুলো প্র’তিরোধের জন্য ধুমপান পরিহার, মদ্যপান থেকে বিরত থাকা ও কাজের সময় প্র’তিরোধমূলক ব্যবস্থা ও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা জরুরি।