বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি ডেস্ক:
বিশ্বের শতাধিক দেশে ম’হামারি আকার ধারণ করা করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) ও’ষুধ আবিষ্কার করতে কাজ করছেন বাংলাদেশের একদল গবেষক। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ (ইউডা) এর লাইভ সায়েন্স অনুষদের গবেষকরা জানিয়েছেন প্রাথমিক গবেষণায় অ্যাপিজেনিন, ভিটেক্সিন এবং আইসো ভিটেক্সিন নামের ৩টি যৌগিক উপাদান পাওয়া গেছে। যা নভেল করোনা ভাইরাসের বিরু’দ্ধে কাজ করতে সক্ষম। প্রথম ধাপের গবেষণায় সফলতার পর সোমবার ২য় ধাপের গবেষণা শুরু হয়েছে। যা সফলতার মুখ দেখলে দেশের বাইরে ল্যাব টেস্টের জন্য নমুনা পাঠানো হবে।
ইউডার লাইভ সায়েন্স অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. রহমত উল্লাহ আলাপচারিতায় এসব তথ্য জানান।
এই গবেষক জানান, ড্রাইল্যাব বা কম্পিউটার গবেষণায় ৩টি যৌগিক উপাদান পাওয়া গেছে। যার মধ্যে অ্যাপিজেনিন, ভিটেক্সিন এবং আইসো ভিটেক্সিন নামের ৩টি উচ্চ মাত্রার যৌগিক উপাদান রয়েছে। যা নভেল করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর বিপরীতে কাজ করতে সক্ষম। ইংল্যান্ডের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়েও এই গবেষণাটি যথার্থ বলে প্রমাণিত হয়েছে বলে তিনি জানান।
কেবল নিশিন্দা গাছ নয়, প্রাপ্ত উপাদানগুলো অন্যত্রও রয়েছে জানিয়ে এই গবেষক বলেন, আমরা সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি জানানোর পরে অনেকে নিশিন্দা গাছ নিয়ে ব্যস্ত। নিশিন্দা বিষয় না। নিশিন্দা মাত্র একটা গাছ, যেখানে এই ৩টা উপাদান আছে। উপাদানগুলোর প্রথমটির কথা যদি বলি, অ্যাপিজেনিন। অ্যাপিজেনিনের সবচেয়ে ভালো সংস্থান হচ্ছে কালিজিরা। এছাড়া আমাদের দেশে যেসব ফল পাওয়া যায়, তারমধ্যে বাকি উপাদানগুলোও প্রচুর পরিমাণ রয়েছে।
গবেষণার পদ্ধতি সম্পর্কে জানাতে গিয়ে প্রফেসর ড. রহমত উল্লাহ বলেন, আমরা যে ডাটা পেয়েছি, সেটা ভুল না। শক্ত সম্ভাবনা রয়েছে যে, ডাটা ঠিকই আছে। তবে এটা এখনো অ’সম্পূর্ণ। কারণ আমরা সি-৩ প্রোটিয়েস পেয়েছি। এর মাঝখানে তো সি-৩ প্রোটিয়েস না এস প্রোটিন ভাইরাসের এইচ-২ হিউম্যান বডি এই দুটোর মধ্যে রিঅ্যাক্ট করছে। রিঅ্যাক্ট করে শরীরের মধ্যে যাচ্ছে। কাজেই আমাদের পরবর্তী কাজটা হবে এস প্রোটিন ভাইরাসটাকে দেখা, প্রয়োজন হলে এই ৩টি কম্পাউন্ড (অ্যাপিজেনিন, ভিটেক্সিন এবং আইসো ভিটেক্সিন) নিয়ে দেখা। তবে এখানে গল্পের শেষ হবে না। এটাকে দেখতে হবে যে, এটা ভাইরাসটাকে বাড়তে দিচ্ছে না অথবা ভাইরাসটাকে প্র’তিহত করে ফেলছে।
সোমবার থেকে শুরু হওয়া ২য় ধাপের গবেষণা সফলতা পেলে এই ফর্মুলা ও’ষুধে রূপান্তরিত হতে পারে উল্লেখ করে এই গবেষক বলেন, আমাদের কর্মপন্থা হচ্ছে, আজ থেকে এস প্রোটিন ভাইরাসের বিরু’দ্ধে কাজ শুরু করা। আমরা দেখব, এইচ-২ টা কী দিয়ে ব্লক করলে এইচ-২ আর এস প্রোটিন একত্রিত হতে পারবে না। এটা যদি হয় আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারব ভাইরাসটা প্র’তিহত করতে পারব।
গবেষণা সফল হলে কোনো প্যাটেন্ট না করে তা ও’ষুধ তৈরির জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে বলেও জানান গবেষক রহমত উল্লাহ। বলেন, আমরা যে কম্পাউন্ডগুলো পেয়েছি, তা ক্যামিকেল আকারে আগে থেকেই বাজারে রয়েছে। ফলে ও’ষুধ তৈরি সম্ভব হলেও তা খুবই কম দামে পাওয়া যাবে।
গবেষণায় প্রফেসর ড. রহমত উল্লাহর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি অনুষদের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. রওনক জাহান, প্রভাষক মো. আরিফ খানসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী কাজ করছেন।