কান্না চেপে আশার কথা শোনালেন মাশরাফি

0

স্পোর্টস ডেস্ক:

চোখে হাসি বুকে কান্না। অধিনায়ক হিসেবে শেষ ম্যাচে এই হলেন মাশরাফি!

জয়ের পর পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে যখন এলেন চোখেমুখে হাসি লেগে ছিল। কিন্তু কথা বলেছেন একটু থেমে থেমে। বোঝাই যাচ্ছিল আবেগ সংবরণের চেষ্টা করতে হচ্ছে। একটু আগেই তামিম ইকবাল তাকে কাঁধে তুলে ঘুরিয়েছেন। সঙ্গে ছিলেন বাকি সতীর্থরা। এরপর মাশরাফির ২ নম্বর জার্সিও পরেছেন ক্রিকেটাররা। যেখানে বুকের ওপর লেখা ছিল ‘ধন্যবাদ, অধিনায়ক।’ আবেগের এসব পর্ব শেষে সত্যি কথাটাই বললেন মাশরাফি, ‘এ সময়টা খুব কঠিন।’

বোঝাই যাচ্ছিল, অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর এ মুহূর্তে বিরহে কাতর মাশরাফি। কাকতালীয় ব্যাপার, ২০০৯ সালে মাশরাফির প্রথম নেতৃত্ব পাওয়ার ম্যাচে নেমেছিল বৃষ্টি। আজ তার শেষ ম্যাচেও বেশ কিছুক্ষণ মাঠ ধুয়েছে বৃষ্টি। মাশরাফির ক’ষ্ট-ও কি? অধিনায়ক অবশ্য সেসব কথায় গেলেন না। বরং তুলে ধরলেন আশার কথা, ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জেতায় খেলোয়াড়দের জন্য ভালো লাগছে। ওদের কাছ থেকে যে সমর্থন পেয়েছি তা অবিস্মরণীয়। কোচদের কাছ থেকেও পেয়েছি। আশা করি নতুন অধিনায়ক দলকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবে। সামনে বিশ্বকাপ আছে।

অধিনায়ক মাশরাফির বিদায়ী ম্যাচে ১৭৬ রানের রেকর্ড গড়া ইনিংস খেলেছেন লিটন দাস। ১২৮ করেছেন তামিম। দু’জনকে নিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘লটন অসাধারণ ব্যাট করেছে। তামিমও। সে হয়তো একটু চাপে ছিল। এটা কেবল শুরু। সামনে বড় সিরিজ আছে। আশা করি ওরা রান করে যাবে। মুস্তাফিজ ও সাইফউদ্দিনের প্রশংসা করে মাশরাফি বলেন, সব সময় বলেছি মুস্তাফিজ আমাদের চ্যাম্পিয়ন। সাইফউদ্দিন তরুণ, ফিরেও এসেছে দুর্দান্তভাবে। আশা করি ওরা ভালো খেলাটা ধরে রাখবে।

‘তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেটের বড় বিজ্ঞাপন’

বিদায়বেলায় মাশরাফিকে বলা সতীর্থদের শংসাবচন থাকল এখানে—

তামিম ইকবাল

তিনি অবিশ্বাস্য! ২০১৪ সালে যখন নেতৃত্বভার নিলেন, ওয়ানডেতে দল হিসেবে আমাদের অবস্থান খুব একটা ভালো ছিল না। ২০১৪ থেকে ২০১৯—তিনি এমন একটা জায়গায় এনেছেন, বিশ্বের যেখানেই যাই খেলতে সবাই আমাদের শক্তিশালী প্রতি’পক্ষ হিসেবে দেখে। এই পরিবর্তনটা অ’বিশ্বাস্য! অনেকবার মানুষ আমাকে একাদশ থেকে বাদ দিতে চেয়েছে, তিনি আমাকে সব সময়ই সমর্থন দিয়ে গেছেন। অধিনায়ক হিসেবে তিনি অ’সাধারণভাবে শেষ করলেন। এখনো তিনি খেলা চালিয়ে যাবেন, তার জন্য শুভকামনা।

মুশফিকুর রহিম

বাংলাদেশ ক্রিকেটে তিনি একজন কিংবদন্তি। অসাধারণ শুধু খেলোয়াড় হিসেবেই নন, মানুষ হিসেবেও। তার জন্য প্রার্থনা, তিনি আরও খেলা চালিয়ে যাবেন। এখনো তিনি যেভাবে বোলিং করেন অন্তত ২ বছর আরও খেলা চালিয়ে যেতে পারবেন। তাকে অনেক মিস করব। তবে তিনি এখনও বাংলাদেশ ক্রিকেটের বড় বিজ্ঞাপন। তার জন্য শুভকামনা।

মাহমুদউল্লাহ

তিনি আমাদের একজন ভাই, একজন বন্ধু। বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য তিনি অনেক করেছেন। আমাদের অনেক সমর্থন করেছেন। বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম সেরা অধিনায়ক। আমাদের সুন্দরভাবে এক সুতোয় গেঁথেছেন। যখন তিনি অধিনায়কত্ব পেয়েছিলেন, আমরা খুব একটা ভালো করতে পারছিলাম না। তাকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে তাকে ধন্যবাদ জানাই।

লিটন দাস

তার মর্যাদা অনেক ওপরে। তার অধীনে আমার অভিষেক হয়েছিল। এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। সব সময়ই আমাকে সমর্থন করে গেছেন। তার মতো অধিনায়ক পাওয়া অনেক বড় ব্যাপার। তাকে সব সময়ই মিস করব। মাঠে তিনি যখন থাকেন, তিনি যে এত বড় খেলোয়াড় বোঝা যায় না। অনেক মজা করেন, ভীষণ বন্ধুসুলভ।

Spread the love
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।