ফিফার কাছে বাংলাদেশের প্রশংসায় যা বললেন ব্রাজিলিয়ান সিজার

0

স্পোর্টস ডেস্ক:

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল চলাকালীন ঢাকা সফর করে গেছেন ব্রাজিল জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক সুপারস্টার গোলরক্ষক হুলিও সিজার। ২ দিনের সেই সফরে সিজার হাতেগোনা কয়েকটি কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন।

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি যাদুঘর পরিদর্শন, বাফুফে ভবনে নির্বাহী কমিটির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত, ফটোসেশন, ভবন সংলগ্ন টার্ফে বিভিন্ন ক্লাবের গোলরক্ষক এবং নারী ফুটবলারদের টিপস প্রদান, আনুষ্ঠানিক মিডিয়া ব্রিফিং এবং বাংলাদেশ ও বুরুন্ডির মধ্যকার বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের সেমিফাইনাল দেখাই ছিল বাংলাদেশ সফরে সিজারের কর্মসূচির মধ্যে।

সিজারকে ঢাকা সফরের জন্য মনোনীত করেছিল ফিফা। কারণ, ব্রাজিলের এই সাবেক তারকা গোলরক্ষক এখন ফিফার লিজেন্ডারি হিসেবে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে থাকেন। এক কথায় হুলিও সিজার এখন আপদমস্তক ফিফার লোক।

বাংলাদেশ সফর করে ফেরার পর সিজার দীর্ঘ এক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ফিফার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ফিফা ডট কম-এ। সেখানে তিনি বাংলাদেশের মানুষ ও ফুটবলের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।

২০ বছরের পেশাদার ক্যারিয়ারে সিজার ৫টি দেশে থেকেছেন এবং আন্তর্জাতিক খেলায় অংশ নিতে অনেক দেশ ভ্রমণ করেছেন। বাংলাদেশ সফর ছিল এই ব্রাজিলিয়ানের নতুন অভিজ্ঞতা। ফিফাকে দেয়া সেই সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ সফরে নিজের অভিজ্ঞতা এবং ভালো লাগাগুলো উল্লেখ করেছেন ৩টি বিশ্বকাপ খেলা এ গোলরক্ষক।

ফিফাকে দেয়া সিজারের সেই সাক্ষাতকারের চৌম্বক অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো…

ফিফা: সিজার, আপনি প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফর করেছেন। সেখানে কোন জিনিসটায় আপনি বিস্মিত হয়েছেন?
সিজার: বাংলাদেশ সফরে আমার কাছে বড় লক্ষণীয় বিষয় ছিল যে, মানুষ কতটা আবেগময় হতে পারে। সেখানেও ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার সমর্থনে ২ ভাগে বি’ভক্ত মানুষ। দুর্ভাগ্যবশত আমি ঢাকায় বেশি সময় থাকতে পারিনি। তবে ফুটবল নিয়ে সেখানকার মানুষের যে স্পৃহা, তা আমি অনুভব করেছি। এমন কি শহরের ট্রাফিকের বিষয়টিও আমার মনে থাকবে। এক কথায় সুন্দর একটি সফর ছিল আমার।

ফিফা: ঢাকা সফরকালে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতির সঙ্গে আপনার আলাপ হয়েছে। তো কী কথা হয়েছে আপনাদের?
সিজার: এটা ছিল খুবই সংক্ষিপ্ত আলোচনা। বাফুফে সভাপতি আমার কাছে উপদেশ চেয়েছিলেন, কীভাবে জাতীয় দলের ফুটবলারদের ফিটনেসের উন্নতি করা যায়। আমি তাকে বলেছি জাতীয় দলের জন্য বেশি বেশি হিউম্যান রিসোর্স ইনভেস্ট করতে। বিশেষ করে দক্ষ ও অভিজ্ঞ কোচ এবং ভালো কিছু পেশাদার মানুষ। তাহলেই আস্তে আস্তে সবকিছুর উন্নতি হবে।

ফিফা: বাংলাদেশের নারী ও পুরুষ দলের অনেক ফুটবলারের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন, তাদের টিপস দিয়েছেন। নতুন প্রজন্মের প্রতিভা ও আবেগ নিয়ে কিছু বলুন।
সিজার: সেখানকার ফুটবলের শক্তি চমৎকার। ছেলে-মেয়েরা ফুটবলের প্রতি অনেক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমার খুবই ভালো লেগেছে। একদিন পেশাদার ফুটবলার হবো-শিশুদের মধ্যে এই স্বপ্নটা দেখে আমি অবাক হয়েছি।

ফিফা: আমরা ধরে নিচ্ছি বাংলাদেশের তরুণ ফুটবলাররা আপনার কাছে টিপস চেয়েছেন কীভাবে বড় খেলোয়াড় হওয়া যায়। আমাদের প্রশ্ন হলো আপনি তাদের কাছ থেকে কিছু শিখেছেন?
সিজার: আমি বাংলাদেশ সফরে যা শিখেছি, তা কেবল শিশুদের কাছ থেকেই নয়, আমি বাংলাদেশের মানুষের কাছেও অনেক শিখেছি। দিনের পর দিন নানা সমস্যার মধ্যে থাকলেও তাদের মুখের হাসি কখনো মুছে যায় না। আমি যে সময়টুকু ঢাকায় ছিলাম, তখন অনেক হাসিমুখই আমি দেখেছি। এটা অবশ্যই শিক্ষণীয়।

ফিফা: ফেডারেশনের অধীনে থাকা একদল গোলরক্ষক আপনার সঙ্গে বেশ সময় কাটিয়েছেন। তাদের আপনি কী উপদেশ দিয়েছেন?
সিজার: আসলে খুব কম সময়ের জন্য আমরা আলোচনা করতে পেরেছি। তবে যতটুকুই করেছি সেটা ফলপ্রসু ছিল। আমি তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি খেলার সময় গোলরক্ষকদের কতটা মনযোগী থাকতে হয়।

ফিফা: অনেক দিন ফুটবল খেলার পর কিংবদন্তি হিসেবে ফিফার নতুন এই দায়িত্বে আছেন। এটা কেমন উপভোগ করছেন? এই নতুন ভূমিকায় আপনার কোন জিনিসটা বেশি পছন্দের?
সিজার: ফিফা কিংবদন্তির অংশ হওয়া নিঃসন্দেহে একটি বিশাল সুযোগ। এটি আমাকে কিছু প্রাক্তন সতীর্থের সাথে পুনঃসংযোগ করার সুযোগ দিয়েছে, যারা আমার ব্যক্তিগত ইতিহাসের অংশ। মাঝে মাঝে দুর্দান্ত সেই মুহূর্তগুলোর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। আমরা সম্মিলিতভাবে বিশ্বজুড়ে বহু লোকের জন্য আনন্দ এবং অনুপ্রেরণা আনতে পারি। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ফুটবলকে শক্তিশালী করতে ফিফাকে সহায়তা করতে পারা অত্যন্ত আনন্দের।

ফিফা: বাংলাদেশ সফরের সময় মানুষ আপনার ইংরেজি বলার লেভেল দেখে প্রশংসাই করেছে। আপনি কি ইংরেজি শিক্ষায় অনেক বেশি সময় দিচ্ছেন?
সিজার: (হাসি) জানি, আমার ইংরেজি বলাটা আরো উন্নত করতে হবে। তবে আমি চেষ্টা করছি। যতটুকু পারি কাজ চালিয়ে নেয়ার জন্য যথেষ্ট। তবে ক্যামেরার সামনে ইংরেজিতে কথা বলার আত্মবিশ্বাসের ঘা’টতি আছে। এ জায়গায় উন্নতি করার প্রতিনিয়ত চেষ্টা আমি করছি। জানি, আমার ভবিষ্যতের জন্য এটা খুবই জরুরী।

Spread the love
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।