৭ লক্ষ মানুষ মরবে বছরে ব্রয়লার মুরগী খাওয়ার কারনে

0

ফিচার ডেস্ক:

মাংস উৎপাদনের উদ্দেশ্যে লালন-পালন করা ব্রয়লার মুরগীসহ সব ধরনের পশুকেই নিয়মিতভাবে প্রায় প্রতিদিনই অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়ানো হয়। এই অ্যান্টিবায়োটিক তাদের শরীরে যায় খাদ্যের মাধ্যমে।

প্রতি বছর বিশ্বে এই উদ্দেশে প্রায় ৬৩ হাজার ১৫১ টন অ্যান্টিবায়োটিক লাগে। ব্রয়লার মুরগী কমবেশি আমাদের সকলেরই পছন্দ। চাহিদাও বাড়ছে দিনদিন। মানব শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় অনিয়ন্ত্রিত অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো ব্রয়লার মুরগী খাওয়ার কারনে। একইসাথে দানা বাঁধে ক্যান্সার শরীরে।

পোল্ট্রি মুরগি খেলে একাধিক জেনারেশনের অ্যান্টিবায়োটিক আমাদের শরীরে আর কাজ করবে না- এমন ভয়ংকর তথ্য উঠে এসেছে একাধিক গবেষণায় এসব। ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা মাত্র ৫ সপ্তাহেই প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে যায় অ্যান্টিবায়োটিকের কারনে!

পড়ুন: অ্যান্টিবায়োটিক: জীবন রক্ষাকারী ওষুধ না প্রাণঘাতী বিষ?

কখনও পুশ করে দেওয়া হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশন, হু হু করে বাড়ে ওজন। চড়চড় করে বড় হচ্ছে মুরগি। অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ালে যে খাদ্য গ্রহণ করে পশুরা তা থেকে সহজেই তাদের দেহে মাংসপেশি উৎপাদিত হয়। আগেভাগে প্রয়োগ করা অ্যান্টিবায়োটিকের প্রভাবে সহজে রোগবালাইয়ে আক্রান্ত না হওয়ার কারণেই এমনটা ঘটে।

ব্রয়লার মুরগীকে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো নিষেধ নয়। কিন্তু প্রতিটি অ্যান্টিবায়োটিকেরই কিছুটা নিরাপদ সময়সীমা রয়েছে। এই সময়ের আগে মুরগীকে বাজারে বিক্রয় করে দিলে তা মুরগীর শরীরে মিশে যাওয়ার আগেই মানব শরীরে ঢুকে যায়। ক্ষতির শুরুটা এখান থেকেই। ব্রয়লার মুরগীর জন্য নির্ধারিত যেসব খাদ্য উপকরণ ব্যবহার করা হয়, যা খেলে মুরগীর শরীরের ওজব বাড়ে দ্রুত, তাতেই আসলে মিশ্রিত থাকে গ্রোথ হরমোন এবং অ্যান্টিবায়োটিক।

আর এসবের কারনে ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যায় মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই। ছোটখাটো পেটের রোগ, গ্যাস, অম্বল, সর্দিকাশি, ইনফেকশনের ক্ষেত্রেও অ্যান্টিবায়োটিক আর কাজ করবে না। তখন রোগ সারাতে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিকের সাহায্য নিতে হবে ডাক্তারদের। আমাদের শরীরে যে অ্যান্টিবায়োটিকের একাধিক কুপ্রভাব পড়বে, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়।

ফুড পয়জনিং হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায় ব্রয়লার চিকেন খেলে। একাধিক গবেষণয়া দেখা গেছে প্রায় ৬৭ শতাংশ ব্রয়লার মুরগির শরীরে ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়া থাকে যা কোনভাবেই কিন্তু আমাদের শরীরের জন্য ভালো নয়।

বাজার থেকে ব্রয়লার মুরগির মাংস কিনে কখনই বাকি খাবার বা সবজির সঙ্গে সেটি রাখবেন না। শুধু তাই নয়, যে ছুরি দিয়ে মাংসটা কাটবেন তা দিয়ে ওই সময় সবজি কাটবেন না।

কাঁচা মাংসে প্রচুর মাত্রায় ব্যাকটেরিয়া থাকে। আর দোকানে যেভাবে একাধিক মুরগিকে এক সঙ্গে রাখা হয় তাতে দু-পাঁচটার শরীরে সেই ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াগুলি প্রবেশ করে না যাওয়াটা কোনও অস্বাভাবিক নয়, এই জীবাণু যদি আমাদের শরীরে প্রবেশ করে তাহলে আর রক্ষা নেই।

দেশি মুরগি একেবারে প্রকৃতির নিয়ম মেনে বড় হয়। দেশি মুরগিতে এমন কিছু ক্ষতিকারক জিনিস পাওয়া যায়নি। এক রিপোর্টে জানা যায়, প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া কমে যাওয়ায় একটি গুরুতর হুমকির সম্মুখীন হতে যাচ্ছে মানবসভ্যতা। যার ফলে বছরে ৭ লক্ষ মানুষ মৃত্যুর মুখে পড়বে। শেষ হবে সম্পদ আর দেশ হারাবে জাতীয় উৎপাদনশীলতা।

Spread the love
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।