বিশ্বসেরা ১০ বিজ্ঞানীর কথা

0

ফিচার ডেস্ক:

বর্তমান সমাজ আধুনিকতার কৃতিত্ব সিংহভাগই বিজ্ঞানকে দিতে হয়। আজকে বিজ্ঞানকে আমরা যে পর্যায়ে দেখছি তার পেছনে রয়েছে শত শত বছরের হাজারো নিবেদিত মানুষের শ্রম। আর বিজ্ঞানের রয়েছে অনেক শাখা। এর প্রধান তিনটি শাখা হল ভূতত্ত্ব, পদার্থবিদ্যা, এবং রসায়ন। এর প্রতিটি শাখাতেই বিজ্ঞানীদের অসামান্য অবদানের জন্যই আমরা আজ আধুনিক সব প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি। এমন অনেক বিজ্ঞানী আছেন যাদের আবিষ্কারের উপর ভিত্তি করেই বিজ্ঞান এগিয়ে চলেছে। আবিষ্কৃত হয়েছে নিত্য নতুন তত্ব ও প্রযুক্তি। এমনই সেরা ১০ জন বিজ্ঞানী সম্পর্কে কিছু তথ্য নিয়েই আমাদের আজকের আয়োজন।

১। আলবার্ট আইনস্টাইন

১৯২১ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন আলবার্ট আইনস্টাইন। তাঁর তাত্ত্বিক পদার্থ বিজ্ঞানে অবদান ও আলোক-তড়িৎ ক্রিয়া সম্পর্কিত গবেষণা বিখ্যাত। ১৯৩৩ সালে এডলফ হিটলার জার্মানিতে ক্ষমতায় আসলে দেশটিতে ইহুদী বিদ্বেষ বেড়ে যায়। ওই সময় তিনি বার্লিন একাডেমি অব সায়েন্সের অধ্যাপক ছিলেন। ইহুদী হওয়ার কারণে আইনস্টাইন দেশত্যাগ করে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। ১৯৯৯ সালে টাইম সাময়িকী আইনস্টাইনকে “শতাব্দীর সেরা ব্যক্তি” হিসেবে ঘোষণা করে।

২। আইজাক নিউটন

আইজাক নিউটন বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী বিজ্ঞানী। ১৬৮৭ সালে তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘ফিলসফিয়া ন্যাচারালিস প্রিন্সিপিয়া ম্যাথামেটিকা’ প্রকাশিত হয়। সেখানে তিনি সার্বজনীন মহাকর্ষ এবং গতির তিনটি সূত্র উলেখ করেছিলেন। এই সূত্র ও মৌল নীতিগুলোই চিরায়ত বলবিজ্ঞানের ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে। নিউটনই প্রথম দেখিয়েছিলেন, পৃথিবী এবং মহাবিশ্বের সকল বস্তু নির্দিষ্ট সূত্রের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। ২০০৫ সালে রয়েল সোসাইটি বিজ্ঞানের ইতিহাসে প্রভাব বিচারে নির্বাচন আয়োজন করে। ফলাফলে দেখা যায়, নিউটন আইনস্টাইনের চেয়েও অধিক প্রভাবশালী।

৩। গ্যালিলিও গ্যালিলী

গ্যালিলিও দূরবীক্ষণ যন্ত্রের উন্নয়ন করেছিলেন। আর এই উন্নয়নই জ্যোতির্বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। নিউটনের গতির প্রথম এবং দ্বিতীয় সূত্র ও কোপার্নিকাসের মতবাদ প্রমাণে তাঁর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং বলেছিলেন আধুনিক যুগে প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের অগ্রগতির পেছনে গ্যালিলিওর চেয়ে বেশি অবদান আর কেউ রাখতে পারেনি।

৪। নিকোলা টেসলা

নিকোলা টেসলা পাগল বিজ্ঞানী হিসেবে বহুল পরিচিত। তিনি তড়িৎ শক্তি উন্নয়নের জন্য কাজ করেন। ১৮৮৪ সালে তিনি নিউইয়র্কে চলে যান। সেখানে টমাস আলভা এডিসনের সঙ্গে কাজ শুরু করেন। তার এক্সরে, তড়িৎ বিচ্ছিন্ন চার্জ নিয়ে গবেষণা করেন। টেসলার পেটেন্টের তালিকায় ইলেকট্রিক্যাল কনডেনসার, ট্রান্সফরমার, সার্কিট কন্ট্রোলার, মেথড অব সিগনালিং এবং গতি নির্দেশক যন্ত্র ছাড়াও আরো অনেক কিছু রয়েছে।

৫। জগদীশ চন্দ্র বসু

জগদীশ চন্দ্র বসু ছিলেন একজন বাঙালি পদার্থবিজ্ঞানী, জীববিজ্ঞানী ও উদ্ভিদবিজ্ঞানী। তিনি রেডিও ও মাইক্রোওয়েভ তরঙ্গ, অপটিক্সের অগ্রগতি ও উদ্ভিদ বিজ্ঞানে অবদান রাখেন। তিনি ক্রসকোফোগ্রাফ উদ্ভাবন করেন। চাঁদের একটি ক্রটার তার সম্মানে নামকরণ করা হয়েছে।

৬। টমাস আলভা এডিসন

টমাস আলভা এডিসন গ্রামোফোন, ভিডিও ক্যামেরা এবং দীর্ঘস্থায়ী বৈদ্যুতিক বাতি সহ অনেক যন্ত্র তৈরি করেছেন। তাঁর আবিষ্কার বিংশ শতাব্দীর জীবনযাত্রায় ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। এডিসনের নামে ১,০৯৩টি মার্কিন পেটেন্টসহ যুক্তরাজ্যে, ফ্রান্স এবং জার্মানির পেটেন্ট রয়েছে।

৭। অালেকজান্ডার ফ্লেমিং

আলেকজান্ডার ফ্লেমিং একজন স্কটিশ ডাক্তার, জীববিজ্ঞানী, ফার্মাকোলজিস্ট এবং উদ্ভিদবিজ্ঞানী ছিলেন। ১৯২৩ সালে তাঁর সর্বপ্রথম আবিষ্কার এনজাইম লাইসোজাইম এবং বিশ্বের প্রথম এন্টিবায়োটিক পদার্থ বেনজাইলেননিসিলিন (পেনিসিলিন জি)। তিনি ১৯৪৫ সালে হোয়াড্ড ফ্লোরী ও আর্নেস্ট বরিস চেইনসহ পদার্থবিদ্যা বা মেডিসিনে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

৮। আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল

টেলিফোনের আবিষ্কারক হিসেবে আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল পরিচিত। তাকে বোবাদের পিতা তথা দ্য ফাদার অফ দ্য ডেফ বলা হয়। তার পরিবারের সবাই অভিনয়ে জড়িত ছিলেন। তার মা ও স্ত্রী কথা বলতে পারতেন না। এ কারণেই বোবাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে তিনি অনেক গবেষণা করেছেন।

৯। মেরি ক্যুরি

প্রথম নারী বিজ্ঞানী হিসেবে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন মেরি ক্যুরি। পদার্থবিজ্ঞানে তেজষ্ক্রিয়তা নিয়ে কাজ করার জন্য এবং রসায়নে পিচব্লেন্ড থেকে রেডিয়াম পৃথক করার জন্য তিনি নোবেল পান।

১০। মাইকেল ফ্যারাডে

মাইকেল ফ্যারাডে তড়িৎ-চুম্বকীয় তত্ত্ব এবং ইলেক্ট্রো কেমিস্ট্রির ক্ষেত্রে ফ্যারাডের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। তিনি প্রমাণ করেছিলেন চুম্বকত্ব আলোক রশ্মিকে প্রভাবিত করে। তাঁর আবিষ্কারের প্রধান বিষয়বস্তুগুলোর মধ্যে রয়েছে তড়িৎ-চৌম্বকীয় আবেশ, ডায়াম্যাগনেটিজম ও তড়িৎ বিশ্লেষণ।

Spread the love
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।