দক্ষিণ এশিয়ায় ইন্দিরা গান্ধীর পর শেখ হাসিনাকেই আমি সেরা নেত্রী মনে করি: ব্রিটিশ কূটনৈতিক

0

মুক্তমঞ্চ ডেস্ক:

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বর্তমান দফায় ক্ষমতায় থাকার চার বছর পূর্ণ করেছে। আর বছরখানেক পর তাকে নির্বাচনে যেতে হবে। এবারের পাঁচ বছরের দেশ শাসনের কী পুঁজি নিয়ে আওয়ামী লীগ আবার দেশবাসীর কাছে ভোট চাইবে, ক্ষমতায় থাকার ম্যান্ডেট চাইবে? প্রশ্নটা কখনও সরবে, কখনও নীরবে আলোচিত হচ্ছে। আমি আওয়ামী লীগের সমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষী। সুতরাং আমার মন্তব্য অনেকে স্তুতি বাক্য বলে মনে করতে পারেন। তা করুন। আমার আপত্তি নেই। কিন্তু আমার ধারণা, ভবিষ্যতে ইতিহাস একদিন অকুণ্ঠভাবে স্বীকার করবে, কিছু কিছু ব্যর্থতা সত্ত্বেও শেখ হাসিনার সমসাময়িককালে দক্ষিণ এশিয়ায় তার দেশ শাসনের সাফল্যের এবং তার নেতৃত্বের কোনো তুলনা নেই।

বাংলাদেশ ছোট এবং এখনও অর্ধ-উন্নত দেশ। কিন্তু এই দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাত, পরিচিত ও স্বীকৃত। নেলসন ম্যান্ডেলা যখন বাংলাদেশে এসেছিলেন, তখন শেখ হাসিনা সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলেন, ‘আমি শেখ মুজিবুর রহমানকে দেখিনি। কিন্তু তার কন্যা শেখ হাসিনার রাজনৈতিক সাহস, মেধা ও প্রজ্ঞার মধ্যে সেই মহানায়কের পরিচয় পেয়েছি।’

ঢাকায় ব্রিটিশ দূতাবাসে দীর্ঘদিন কর্মরত থেকে অবসর নিয়েছেন, এমন এক কূটনীতিক আমাকে একটি চমৎকার কথা বলেছেন। তিনি ঘরোয়া আলাপে আমাকে বলেছেন, ‘আমি এখন কূটনৈতিক চাকরিতে নেই। তাই মনের কথাটা খুলে বলতে পারি। ব্রিটেনে অনেক দায়িত্বপূর্ণ সরকারি পদে রয়েছেন এমন অনেক নেতা মনে করেন, শেখ হাসিনা বর্তমানে স্বৈরাচারী শাসকের মূর্তি ধারণ করেছেন। প্রধান বিরোধী দলকে কোনো ধরনের সভা-সমিতি করতে দিচ্ছেন না। এ সম্পর্কে আমার ভিন্নমত রয়েছে। সে আলোচনা এখন করতে যাচ্ছি না। তার নেতৃত্বের মূল্যায়নে তিনি আমার কাছে প্রকৃতই একজন গণতান্ত্রিক নেতা।’

নিজের বক্তব্য বিশ্নেষণ করতে গিয়ে তিনি বললেন, দক্ষিণ এশিয়ায় ইন্দিরা গান্ধীর পর শেখ হাসিনাকেই আমি সেরা নেত্রী মনে করি। ইন্দিরা গান্ধীও তার বিরোধী মতের অনেক নেতাকে নির্মমভাবে দমন করেছেন। জয়প্রকাশ নারায়ণের মতো তার পিতার বন্ধুকে জেলে পুরেছেন। পুত্র সঞ্জয় গান্ধীর সন্ত্রাসী রাজনীতিকে প্রশ্রয় দিয়েছেন। দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে নাগরিকদের সব অধিকার স্বল্পকালের জন্য হলেও হরণ করেছিলেন। শিখ বিদ্রোহ দমনের নামে স্বর্ণমন্দিরে হামলা চালিয়ে অসংখ্য শিখ নেতাকে পর্যন্ত হত্যা করেছেন।

সাবেক ব্রিটিশ কূটনীতিক বললেন, ‘আমি লক্ষ্য করেছি, শেখ হাসিনা তার তিন দফা ক্ষমতায় থাকার সময় দলের ভেতরে বা বাইরে তার বিরোধীদের নির্যাতন বা দমন করার নীতি গ্রহণ করেননি। রাজনৈতিক খেলার কৌশলে তাদের পরাস্ত করেছেন। কেউ কেউ এই পরাজয়ের পর রাজনীতি থেকে বিদায় নিয়েছেন বা রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে আছেন। কোথায় আজ ড. কামাল হোসেন, নোবেল লরিয়েট ড. ইউনূস, কাদের সিদ্দিকী বা ডা. বদরুদ্দোজা? এরা কেউ ছিলেন শেখ হাসিনার দলের লোক, কেউ বাইরের লোক। কারও গায়ে একটি ফুলের টোকাও দেননি শেখ হাসিনা। এরা কত প্রতিপত্তিশালী নেতা! এদের কত বিদেশি পৃষ্ঠপোষকতা! তবু এরা নিজেরাই নিজেদের সুবিধাবাদী রাজনীতির দায়ে এখন রাজনৈতিক ফসিল।

সাবেক কূটনীতিক বললেন, বিরুদ্ধ মত মোকাবেলা করার ক্ষেত্রেও শেখ হাসিনা অনেক বেশি সতর্ক ও উদার। ভারতের নেহরুর মতো গণতান্ত্রিক নেতাও তার বিরোধী একটি শক্তিশালী মিডিয়া গ্রুপকে সহ্য করেননি। এই মিডিয়া গ্রুপের মালিক ছিলেন বিখ্যাত শিল্পপতি ডালমিয়া। বাংলাভাষায় প্রকাশিত তার দৈনিক ‘সত্যযুগ’ পত্রিকা ছিল অত্যন্ত প্রগতিশীল ও পাঠকপ্রিয় সংবাদপত্র। নেহরুর বিরোধিতা করায় এই মিডিয়া গ্রুপের অধিকাংশের (সত্যযুগসহ) প্রকাশনা যাতে বন্ধ হয়, তার ব্যবস্থা করা হয়। ডালমিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা সাজিয়ে তাকে জেলে নিক্ষেপ করা হয়।

এই কাজটি শেখ হাসিনা বাংলাদেশে সহজেই করতে পারতেন একটি নিরপেক্ষতার ভেকধারী মিডিয়া গ্রুপের বিরুদ্ধে। কারণে-অকারণে, কখনও প্রকাশ্যে, কখনও প্রচ্ছন্নভাবে হাসিনা সরকারের বিরোধিতা, তার সরকারের সব কাজ সম্পর্কে অপপ্রচার এই মিডিয়া গ্রুপের নীতি। এই মিডিয়া গ্রুপের মালিকও একজন বিতর্কিত শিল্পপতি। তিনি তুলসী পাতা নন। আমরা বিদেশি কূটনীতিকরাও এই মিডিয়া গ্রুপের প্রচারণা, নির্বাচনকালে তাদের অসাধু ভূমিকা লক্ষ্য করেছি।

তিনি বললেন- অনেক সময় আশঙ্কা করেছি, শেখ হাসিনা ধৈর্যচ্যুত হয়ে হয়তো এই মিডিয়া গ্রুপের প্রকাশনা বন্ধ করার ব্যবস্থা করবেন, তিনি তার কিছুই করেননি। এই গ্রুপের এক সম্পাদকের বিরুদ্ধে এক ঘটনায় একাধিক মামলা হওয়া ছাড়া আর কিছুই হয়নি। এটাকেই সাংবাদিক নিগ্রহ ও সংবাদপত্র দলন বলে চালানো হচ্ছে। এই মিডিয়া গ্রুপের প্রকাশনা এবং হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে কখনও প্রকাশ্য, কখনও প্রচ্ছন্ন অপপ্রচার এখনও অব্যাহত রয়েছে। কোনো কোনো বিদেশি দূতাবাস ও কূটনীতিক এই প্রচারণা দ্বারাও প্রভাবিত হয়েছেন।

আমি তাকে বলেছি, এক শ্রেণির পশ্চিমা দেশ বা তার কূটনীতিকরা এই প্রচারণা দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন না বলে তারা এই প্রচারণাকে তাদের সামরিক ও অর্থনৈতিক আধিপত্যবাদী স্বার্থে কখনও সমর্থন ও কখনও সহায়তা জুগিয়েছেন বলা চলে। বাংলাদেশের পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে বিশ্বব্যাংকের খেলা এবং তাদের অসত্য প্রচারে একশ্রেণির দেশীয় বুদ্ধিজীবীকে সুর মেলাতেও আমরা দেখেছি।

এই সাবেক ব্রিটিশ কূটনীতিকের সাফল্য এবং বাংলাদেশের রাজনীতির খুঁটিনাটি সম্পর্কে তার জ্ঞান দেখে বিস্মিত হয়েছি। তার নাম এখানে প্রকাশ করলাম না তারই অনুরোধে। তিনি বাংলাদেশে ‘হাসিনা-যুগের বিশেষত্ব’ নামে ইংরেজিতে একটি বই লিখছেন। এটি এই বছরের মাঝামাঝি প্রকাশ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তখন বাংলাদেশের অনেকেই তাকে চিনতে ও জানতে পারবেন।

হাসিনা-নেতৃত্বের গণতান্ত্রিক চরিত্র সম্পর্কে আমি এই বিদেশি কূটনীতিকের সঙ্গে সহমত পোষণ করি। আগামী সাধারণ নির্বাচনে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তার দল আবারও জয়ী হবে কি-না জানি না। কিন্তু আমার মতে, দেশের বর্তমান উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ও অব্যাহত রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার স্বার্থে তার সরকারের আরও একবার ক্ষমতায় আসা ও থাকা উচিত। বর্তমানে দেশে হাসিনা-নেতৃত্বের কোনো বিকল্প নেই। বর্তমান মহাজোট সরকারের মধ্যে যত দোষত্রুটি থাকুক, এই সরকার ডান ও বাম গণতান্ত্রিক দলের মোর্চা দ্বারা গঠিত। এর বিকল্প কোনো শক্তিশালী গণতান্ত্রিক দল দেশে থাকলে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আরও কিছুকাল থাকা না থাকা সম্পর্কে মাথা ঘামাতাম না; কিন্তু তেমন বিকল্প কিছু নেই।

বর্তমান ক্ষমতাসীন মহাজোটের বিকল্প হচ্ছে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গঠিত স্বাধীনতার শত্রু জামায়াত এবং সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী দলগুলোর জোট। এরা আওয়ামী লীগের বিরোধী হলে কথা ছিল না। এরা স্বাধীনতার মূল চেতনা ও আদর্শের বিরোধী। গণতন্ত্রের আবরণে এদের ফ্যাসিবাদী মোর্চা বলা চলে। এই ফ্যাসিবাদের সঙ্গে লড়াইয়ে গণতন্ত্রকে উদার হলে চলবে না। গত শতকের ত্রিশের দশকে জার্মানিতে হিন্ডেনবার্গের দুর্বল গণতান্ত্রিক সরকার এবং ইতালির নিয়মতান্ত্রিক রাজা ভিক্টর ইমানুয়েলের সরকার হিটলার ও মুসোলিনির ফ্যাসিবাদী দলের সঙ্গে গণতান্ত্রিক আচরণ দেখাতে গিয়ে গোটা বিশ্বে গণতন্ত্র ও মানবতার জন্য যে বিপদ ডেকে এনেছিল, সে ইতিহাস আমরা জানি।

বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ ধোয়া তুলসী পাতা, তা বলি না। বাংলাদেশে গণতন্ত্র সাবালকত্ব অর্জন করেছে, তাও বলি না। এই গণতন্ত্রের শরীরে এখনও অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি। তা রাতারাতি দূর করা যাবে না। গণতন্ত্র ফ্যাসিবাদ নয় যে রাতারাতি লৌহ শাসন জারি করবে। গণতন্ত্র ‘ট্রায়াল অ্যান্ড এরোরের’ মধ্য দিয়ে এগোচ্ছে বাংলাদেশে। নানা সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে তাকে এগোতে হচ্ছে। তার ওপর রয়েছে সন্ত্রাস ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি। গণতন্ত্র দুর্বল ও উদার থাকায় বাংলাদেশে বারবার সামরিক ও স্বৈরাচারী শাসন এসেছে। এখন আমার কথা, শেখ হাসিনা কঠোর হয়েছেন। তার অধীনে বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখন ‘গণতান্ত্রিক উদারতা’ ও ‘সহনশীলতার’ নামে দুর্বল গণতন্ত্র নয়। বরং সবল গণতন্ত্র। আঘাত খেলে এই গণতন্ত্র এখন প্রত্যাঘাত করতে জানে।

শেখ হাসিনা দেশের গণতান্ত্রিক শক্তির সঙ্গে নয়, গণতন্ত্রের মুখোশ ঢাকা ফ্যাসিবাদের সঙ্গে গণতান্ত্রিক আচরণ করছেন না বরং সবলনীতি গ্রহণ করেছেন। সাংবাদিকতার নামে অপসাংবাদিকতাকে রুখে দিয়েছেন। যে দুর্বৃত্ত সাংবাদিকের ছদ্মবেশে রাষ্ট্র ও সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল, আদালত যাকে বলেছেন এডিটর বাই এক্সিডেন্ট, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা হাসিনা সরকার গ্রহণ করেছে। প্রকৃত সম্পাদক ও সাংবাদিকের বিরুদ্ধে নয়।

তবু মুখ চেনা মহল চিৎকার জুড়েছে। দেশে গণতন্ত্র নেই, মানবাধিকার নেই, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই, বিরোধী দলের রাজনীতি করার অধিকার নেই ইত্যাদি। বিরোধী দল বলতে এখানে সেই দল, যারা আন্দোলনের নামে রাজপথে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে এই সেদিনও শত শত নিরীহ নরনারী-শিশু হত্যা করেছে। তারা কি একবারও বলেছে, অতীতের এই নৃশংসতার জন্য, মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য তারা অনুতপ্ত, জনগণের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী? না, তারা তা একবারও বলেনি। এখন তারা নখদন্তহীন বৃদ্ধ সিংহ। তাই গণতন্ত্রের নামাবলি আবার শরীরে চাপিয়েছেন।

শেখ হাসিনা যদি আর কিছু না-ও করতেন, তথাপি ইতিহাসে অমরত্বের আসন পেতেন দুটি কারণে- একটি বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার ও দণ্ড এবং অন্যটি ‘৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শেষে শাস্তিদান। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ শেষে যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে সঙ্গে বিচার ও দণ্ড দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী জঘন্য অপরাধ করার ৪০ বছর পর যখন অপরাধীরা সমাজ জীবনের, এমনকি রাজনৈতিক ক্ষমতায় সুপ্রতিষ্ঠিত এবং তাদের পেছনে রয়েছে স্বার্থসংশ্নিষ্ট শক্তিশালী আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন, তখন কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে এই অপরাধীদের বিচার ও চরম শাস্তি প্রদান ইতিহাসের একটি বিরল ঘটনা। সাম্প্রতিককালের ইতিহাসের কোনো লৌহমানবীর জীবনেও শেখ হাসিনার মতো সাহস দেখানোর কোনো নজির নেই।

আমার এই লেখার প্রায় সবটা জুড়েই হাসিনা-নেতৃত্বের বিরল কৃতিত্ব ও সাফল্যের কথা বলেছি। এবার একটি বড় ব্যর্থতার কথা বলি। তিনি তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের শত্রুদের মোকাবেলায় যতটা সাহস ও কঠোরতা দেখাতে পেরেছেন, তার নিজের দল আওয়ামী লীগকে ততটা কঠোরতার সঙ্গে সংশোধিত ও সংগঠিত করে তুলতে পারেননি। কোথায় যেন একটা গোপন মাতৃস্নেহ তার হৃদয়ে দলের জন্য কাজ করেছে। ফলে দলে আগাছাদের প্রতিপত্তি বেড়েছে বেশি। জনগণ তাদের পছন্দ করে না।

তাতে তারা ভীত নয়। তারা মনে করেন, শেখ হাসিনার যে বিপুল প্রতিষ্ঠা ও জনপ্রিয়তা, তাকে পুঁজি করেই আগামী নির্বাচনেও তারা জিতবেন; জনগণ তাদের লুটপাটের কথা ভুলে যাবে। এই অন্ধ বিশ্বাস ও অহমিকাই আওয়ামী লীগের বিপর্যয় ঘটাতে পারে। আর আওয়ামী লীগের বিপর্যয়ের অর্থ দেশের গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক ভবিষ্যতের বিপর্যয়। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে জয়লাভের পর ব্রিটেনের কনজারভেটিভ পার্টি ভেবেছিল, তাদের যুদ্ধজয়ী নেতা চার্চিল এখন ‘জাতির ত্রাণকর্তা’। তার জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে তারা চোখ বুজে ১৯৪৫ সালে সাধারণ নির্বাচনে জিতবে। সেই নির্বাচনে তাদের শোচনীয় পরাজয় ঘটেছিল।

শেখ হাসিনার কাছে আমার নিবেদন, যতটা কঠোরতা ও সাহস নিয়ে তিনি এখন দেশের গণতন্ত্রবিরোধী চক্রগুলোকে রুখছেন, ততটা সাহস ও দৃঢ়তা নিয়ে আওয়ামী লীগকে সম্পূর্ণ ঢেলে সাজানোর ব্যবস্থা করুন। সুবিধাবাদী ও দুর্নীতিবাজদের দল থেকে ঝেঁটিয়ে বিদায় দিন। দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল দূর করুন। তার নিজের বিপুল জনপ্রিয়তা তো আছেই, সেই সঙ্গে সংশোধিত ও সংগঠিত দলের শক্তি যোগ হলে আগামী সাধারণ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের নৌকাডুবির কোনো আশঙ্কা নেই। রংপুরের সাম্প্রতিক মেয়র নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি দেশের কোনো এলাকাতেই হবে না।

লেখক: আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী
পরিচিতি: গ্রন্থকার, কলাম লেখক ও রাজনীতি বিশ্লেষক

Spread the love
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।